কেমন আছেন সবাই। প্রথমে সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আইটি বাড়ির সাথে থাকার জন্য। আমাদের সাইটে এসইও নিয়ে গত পোস্ট করার পর আপনাদের ব্যাপক সাড়া দেখে আমি সত্যিই আনন্দিত। তাই অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম এবার থেকে যথাসম্ভব নিয়মিত সাইটে পোস্ট করব ইনশাআল্লাহ্। এসইও টিউটোরিয়াল পাবলিশ করার পর আপনাদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটি পেয়েছি সেটা হচ্ছে-
“আমি কিভাবে কোন দিক থেকে এসইও শুরু করব এবং নিজে একটি সাইট করতে চাই, কিভাবে শুরু করব?”
এর আগের পোস্টে যদিও আমি আপনাদের সাথে এটা নিয়ে আলচনা করেছি, তবে আমার মনে হয় সেই পোস্তটা আরেকটু ভাল মানের এবং আরেকটু গোছানো হওয়া উচিত। তাই আজকের এই পোস্ট। এখানে কোন দিক দিয়ে একটি সাইটের এসইও শুরু করবেন এবং কিভাবে ধীরে ধীরে আগাবেন সেই দিক গুলো নিয়ে পার্ট বাই পার্ট বিভিন্ন পর্বে আলোচনা করা হবে।
এসইও করতে একদম প্রথমে যা করতে হবেঃ
সাইটের মূল টপিক বা কিওয়ার্ড নির্বাচনঃ
যে কোন সাইটের এসইও-ই হোক বা সাইটের গঠনই হোক না কেন, কিওয়ার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। যারা আমাদের কাছ থেকে এসইও টিউটোরিয়াল সংগ্রহ করেছেন তারা অবশ্যই জানেন কিওয়ার্ড কি এবং কেন? তবুও জানার জন্য হালকা একটু বলছি, কি ওয়ার্ড হচ্ছে সেই সকল শব্দ যা লিখে কেউ গুগলে সার্চ করে। অর্থাৎ গুগলে যা লিখে সার্চ দেয়া হয় এসইও এর ভাষায় সেটাই হচ্ছে কিওয়ার্ড। তবে যে কোন সাইট তৈরি করার আগেই আপনাকে অনেক ভেবেচিন্তে আপনার সাইটের মেইন কিওয়ার্ড বা মূল টপিক নির্বাচন করতে হবে। এটা যে কোন প্রকারের সাইটের জন্য প্রথম এবং আসল ধাপ। সাইট তৈরির আগে অন্তত এক সপ্তাহ আপনাকে কিওয়ার্ড নিয়ে গভীর অ্যানালাইসিস করতে হবে। অবশ্যই মনে রাখবেন, যে কোন সাইটের সফলতার জন্য সঠিক টপিক নির্বাচন করা অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান কাজ। আপনার সাইটের টপিক নির্বাচন করতে হলে আপনাকে যে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে-
১. আপনার সাইটটি করার মূল উদ্যেশ্য কি?
- => আপনি কি সাইটে গুগল অ্যাডস্যান্স দিয়ে আয় করতে চান?
- => আপনি কি শুধুমাত্র ব্লগিং এর সাইট করতে চান?
- => আপনি কি আপনার কোন পণ্য বিক্রির জন্য সাইট করতে চান?
- => নাকি অনলাইন কোন সার্ভিস দেয়ার জন্য সাইট করবেন?
২. আপনি যদি ঠিক করে ফেলেন আপনি ঠিক কি জন্য সাইট করতে চান, তাহলে এবার দেখে নিন আপনি যে উদ্দেশ্যে সাইট করতে চাচ্ছেন তার জন্য এসইও এর বর্তমান পজিশন কি? যেমন- ধরে নিলাম, আপনি টেকনোলজি বিষয়ক ব্লগ খুলতে চাচ্ছেন এবং সেটাতে এসইও করে ভিজিটর বাড়াবেন এবং গুগল এ্যাডসেন্স থেকে আয় করবেন। তাহলে এখন আপনাকে নিজে নিজে নিচের প্রশ্ন গুলোর সঠিক উত্তর বের করতে হবে। যদি পারেন তবেই সাইট করুন-
- => আপনি ঠিক কতটা জানেন আপনার নির্ধারিত বিষয়ে?
- => আপনি কি নিয়মিত পোস্ট করতে পারবেন আপনার সাইটে?
- => আপনার সাইটকে আপনি কি কোন ওয়েল ডিজাইনার দিয়ে ডিজাইন করাবেন? (পেজর্যাঙ্ক এর জন্য সাইটের ডিজাইন অনেক ভুমিকা রাখে)
- => সাইটের প্রয়োজনে আপনার কাছে ঠিক কতটা সময় আছে।
- => সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল, এই রিলেটেড সাইটের বর্তমান চাহিদা কেমন? বর্তমান সময়ের কোন হট বিষয় নিয়েও সাইট করতে পারেন।
এটা গেল সাইট তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া বিষয়ক কিছু কথা। উপরের প্রশ্ন গুলোর উত্তর যদি বের করতে পারেন তাহলে এবার দেখার সময় হয়েছে আপনি যে বিষয়ে সাইট করবেন সেটার ভ্যালু গুগলে কেমন? আপনার নির্ধারিত বিষয়ে গুগলে কি পরিমাণ সার্চ পড়ে, এর কম্পিটিটর কেমন? কম্পিটিটর অ্যানালাইসিসের জন্য রয়েছে গুগল এর চমৎকার টুলস। গুগলে প্ল্যানার নামে পরিচিত এই টুল দিয়ে আপনি সহজেই জানতে পারবেন কোন কিওয়ার্ড এ কি পরিমাণ সার্চ পড়ে, এর কম্পিটিশন কেমন ইত্যাদি। সাধারণত এমন টপিক নির্বাচন করাই শ্রেয় যেই সম্পর্কে আপনি মুটামুটি জানেন এবং নিয়মিত পোস্ট করতে পারবেন। তবে এই জন্য আপানাকে যে বিদ্যার সাগর হতে হবে এমন নয়, নেট থেকে হেল্প নিয়েও আপনি পোস্ট করতে পারবেন। তবে এটা ভেবে দেখতে হবে, আপনি কতটা অ্যাক্টিভ থাকতে পারবেন সাইটে।
মোট কথা “সাইট যদি তৈরি করতেই হয় তাহলে সম্পূর্ণ প্রফেশনাল ভাবেই করুন। ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিন।”
এবার সাইটকে রেডি করুন-
এতক্ষন বললাম সাইট তৈরির কথা। ধরলাম আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একটি ওয়েবসাইট খুলবেন এবং সেটা হবে স্বাস্থ্য রিলেটেড সাইট। আপনি কিওয়ার্ড রিসার্চ করে একটি ডোমেইন নেইম সিলেক্ট করেছেন এবং সাইট ডিজাইন করেছেন । এখন আপনার সাইটের হোমপেজের জন্য একটি চমৎকার মেটা টাইটেল এবং ডিসক্রিপশন দিন। এখানে আপনি আপনার হোমপেজে যে মেটা ডাটা ব্যবহার করবেন সেটাই আপনার সাইটের মূল হোমপেজের জন্য গুগলের সার্চ রেজাল্টে প্রদর্শিত হবে। যেমন আপনি যদি গুগলে https://www.itbari.com লিখে সার্চ দেন তাহলে প্রথমেই এই সাইটের হোমপেজের রেজাল্ট প্রদর্শিত হবে এবং এখানে এই সাইট সম্পর্কে আপনি যে যে ইনফরমেশন দেখতে পারবেন সেটাই কিন্তু এই সাইটের হোমপেজের মেটাতে দেয়া হয়েছে। কাজেই বুঝতে পারছেন এসইও তে মেটার মূল্য অনেক। যে কোন পেইজের বা পোস্টে আপনি যে মেটা টাইটেল এবং ডিসক্রিপশন দিবেন গুগল এর রেজাল্টে সেই পেইজ বা পোস্টের জন্য সেই টাইটেল এবং ডিসক্রিপশন-ই প্রদর্শিত হবে। এক কথায় হোমপেজে মেটা যোগ করার মাধ্যমে আপনি এসইও এর প্রথম কাজটি সম্পাদন করে ফেললেন।
সাইটে কিছু পোস্ট করুনঃ
এবার আপনার সাইটে কিছু পোস্ট করুন। সাইটে পোস্ট করার সময় অবশ্যই এসইও এর রুলস গুলো ফলো করুন। সব সময় মাথায় রাখবেন, Content is King, গুগল এর কাছে লিগেল কনটেন্ট ছাড়া আর অন্য কিছুর কোন গুরুত্ব নেই। তবে কনটেন্ট বিভিন্ন ধরণের হতে পারে- টেক্সট, ভিডিও, ফটো ইত্যাদি। তবে টেক্সট এর ভ্যালু গুগল এর কাছে সর্বাধিক। গুগল এ ফার্স্ট টাইম সাইট সাবমিট করার আগে যদি সাইটে রেডিমেড কিছু পোস্ট থাকে তাহলে সেটা একটা প্লাস পয়েন্ট হতে পারে। এই জন্য সাইটে অন্তত আগে ৫-১০ টা ইউনিক পোস্ট রাখুন। এতে করে ফার্স্টটাইম যখন আপনার সাইটকে গুগল ক্রল করবে তখনই সে আপনার সাইট সম্পর্কে এবং এর কনটেন্ট কোয়ালিটি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা পেয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে যারা ব্লগস্পট দিয়ে সাইট করবেন-
যারা ব্লগস্পট দিয়ে সাইট খুলবেন তারা হয়ত জানেন যে, ব্লগস্পট দিয়ে সাইট করলে সেটা আলাদা করে গুগল এ সাবমিট করানোর প্রয়োজন পরে না কারন ব্লগার এর প্রতিটি ব্লগ গুগল নিজে নিজেই ক্রল করে থাকে। এই জন্য আপনি আগে থাকতেই অন্য কোথাও আপনার কনটেন্ট গুলো লিখে রাখবেন এবং নতুন ব্লগ খুলেই সাথে সাথে ৫-১০ টা নিউ পোস্ট করবেন। এতে করে গুগল যখন সাইট প্রথমবারের মত ক্রল করতে আসবে তখনই সে কিছু লিগেল পোস্ট পাবে এবং আপনার সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণাও পেয়ে যাবে।
পোস্ট করার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা-
“প্রায় বেশির ভাগ সময়ই আমরা পোস্ট করার সময় তাড়াহুড়ো বা বিরক্তিবোধ করে পোস্ট এর ট্যাগগুলো এবং মেটা ডাটা গুলো সঠিকভাবে দেই না, এটা কোন ভাবেই করা যাবে না। কারন, গুগল এর কাছে এগুলোর অনেক ভ্যালু আছে। কাজেই পোস্ট করার সময় অবশ্যই এসইও এর প্রত্যেকটি পার্ট যথাসম্ভব সুন্দর করে মেনে পোস্ট করার চেষ্টা করবেন।”
কিভাবে এসইও উপযোগী করে ইফেক্টিভলি পোস্ট করা যায় বিস্তারিত দেখুন আমাদের ভিডিও টিউটোরিয়ালেঃ
উপরে যে বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো হল সাইট তৈরির প্রাসঙ্গিক কিছু কথা। এখানো কিন্তু মূল এসইও শুরুই হয় নি। আপনি যদি সাইট করতে চান তাহলে উপরের কথাগুলো আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে এবং শুধুমাত্র এই জন্যই এই প্রথম পর্বটি লিখা। যারা নতুন সাইট খুলতে চাচ্ছেন তাদের জন্য উপরের বিষয় গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে যারা ক্লাইন্ট এর সাইটের এসইও করবেন তাদের ক্ষেত্রে আগামীতে ধারাবাহিক ভাবে বাকি বিষয়গুলো নিয়ে লিখব ইনশাআল্লাহ্।
১৩০টি+ বাংলা ভিডিও টিউটোরিয়াল সম্বলিত এসইও এবং অনলাইনে আয়ের উপর বাংলা ভিডিও টিউটোরিয়াল সংগ্রহ করতে এখানে ক্লিক করুন।
পোস্টটি কেমন লাগল সে বিষয়ে আপনার মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না। আর কোথাও কোন ভুল ত্রুটি থাকলে নির্দ্বিধায় জানিয়ে দিবেন। পোস্টটি পড়ার জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
2 Responses
ভাইয়া backlink তৈরী করার পরে,এই backlink টা কতদিন পরে show করে….
খুব সুন্দর