কেমন আছেন সবাই? অনেক দিন পর আরও একটি টিউন নিয়ে ফিরে এলাম। নতুন অবস্থায় ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়াটা অনেকটাই কঠিন বলা চলে। নতুনদের মধ্যে অনেকেই অনেক দিন ধরে বিড করে যাচ্ছেন কিন্তু কাজ পাচ্ছেন না। আসলে একেবারে নতুন অবস্থায় কাজ পেতে অনেককেই হিমশিম খেতে হয়। তবে বেশ কিছু টেকনিক অবলম্বন করলে কিন্তু আপনি দ্রুত কাজ পেতে পারেন। আজকে আপনাদের সাথে এই রকম কিছু টেকনিক নিয়েই আলোচনা করব।
অনলাইনে দ্রুত কাজ পেতে গেলে আপনাকে যে জিনিস গুলো করতে হবেঃ
১. পরিচ্ছন্ন প্রোফাইলঃ যে কোন মার্কেটেই হোক না কেন, কাজ করতে হলে আপনার অবশ্যই অবশ্যই একটি পরিচ্ছন্ন এবং মার্জিত প্রোফাইল দরকার। সর্বপ্রথম চিন্তা করুন আপনি কোন বিষয়ে কাজ করবেন। ফ্রীল্যান্স মার্কেটে কাজ করতে গেলে সঠিক বিষয় নির্বাচন অতি জরুরী। যদি আপনি আপনার নির্ধারিত বিষয়ে কাজ শিখে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার নির্ধারিত বিষয়কেই হাইলাইট করে প্রোফাইল তৈরি করুন। আপনি সবচেয়ে ভাল যে কাজটি পারেন সেটার উপর ভিত্তি করেই প্রোফাইল তৈরি করুন। প্রোফাইলটিকে এমন ভাবে রাখার চেষ্টা করুন যাতে করে যে কেউ দেখেই বুঝে ফেলতে পারে আপনি কোন ধরণের কাজ জানেন। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ থাকবে, আগে বেশ কয়েকজন টপ ওয়ার্কারদের প্রোফাইল ভাল করে ঘাঁটুন। প্রয়োজনে ৭ দিন সময় নিন, বেশ কয়েকজনের প্রোফাইল দেখুন, বুঝুন এরপর আপনার নিজের প্রোফাইল বিল্ড আপ করুন।
২. পোর্টফোলিওঃ পোর্টফোলিও কি তা হয়ত সবাই জানেন। যারা জানেন না তাদের জন্য আবারও বলছি, পোর্টফোলিও হচ্ছে আপনার পূর্বে করা কাজের নমুনা। প্রতিটি ফ্রীল্যান্সিং সাইটেই পোর্টফোলিও যোগ করার অপশন আছে, আর এটি যোগ না করলে আপনার প্রোফাইল কমপ্লিট হবে না। এখন কথা হল কোথায় পাবেন পোর্টফলিও- আসলে ফ্রীল্যান্স মার্কেটে কাজ করার প্রথম শর্তই হচ্ছে কাজ শিখে প্র্যাকটিস করে তারপর বিভিন্ন ফ্রীল্যান্স সাইটে কাজের জন্য আবেদন করা। আর আপনি যদি আগে কাজ শিখে থাকেন তাহলে অবশ্যই প্র্যাকটিস করেছেন, আর এই প্র্যাকটিস করার সময় আপনি অবশ্যই এমন কিছু কাজ করেছেন যেগুলো ভবিষ্যতে আপনি ফ্রীল্যান্স সাইট গুলোতে করবেন। আর সেই কাজ গুলোকেই আপনি আপনার পোর্টফোলিও হিসেবে যোগ করতে পারেন। প্রোফাইল এ ৫-১০ টা সঠিক পোর্টফোলিও যোগ করলেই যথেষ্ট। তবে, পোর্টফোলিও যোগ করার ক্ষেত্রে ভাল করে ভেবে দেখুন আপনি কোন ধরণের কাজ করবেন, ওই ধরণের কাজ যদি আপনি করতেন তাহলে ক্লাইন্ট কে কি কি ফাইল সাবমিট করতে হত, ঠিক সেই জিনিস গুলোই আগে তৈরি করুন এবং পোর্টফোলিওতে যোগ করুন।
একটু ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে আর একটু ক্লিয়ার হওয়া যাক, ধরুন আপনি ওয়েব ডিজাইন এর কাজ করবেন। সুতরাং আগে থাকতে কিছু নমুনা সাইট তৈরি করুন, যেগুলো আপনি আগে থাকতে পোর্টফোলিওতে রেখে দিবেন যাতে করে বায়ার আপনার প্রোফাইল থেকে সেই পোর্টফলিও দেখে আপনাকে হায়ার করে। আশা করি সবাই পোর্টফলিও বুঝতে পেরেছেন।
৩. সঠিক কাজের রেটঃ নতুন অবস্থায় কাজ পেতে হলে সঠিক কাজের রেট নির্ধারণ করা অতি জরুরী। আপনাকে কাজের জন্য এমন একটি রেট নির্ধারণ করতে হবে যেটা স্বাভাবিক এর চেয়ে সামান্য কম (কারন আপনি নতুন) কিন্তু সম্মানিত একটি রেট। আর এই ক্ষেত্রে কাজে বিড করার আগেই আপনি দেখতে পারবেন ক্লাইন্ট এর আগে কত রেটে বিভিন্ন লোক দিয়ে কাজ করিয়েছেন। যে কোন কাজের টাইটেলে ক্লিক করার পর, একটু নিচের দিকে গেলেই আপনি ক্লাইন্ট এর আগের কাজের হিস্টোরি দেখতে পারবেন। সেই অনুযায়ী বিড করুন। নতুনদের জন্য আমার মতে বিড রেট- ১.০০ থেকে ৩.০০ প্রতি ঘণ্টা হলেই ভাল হয়।
৪. ইম্প্রেশনঃ ক্লাইন্ট এর কাছ থেকে কাজ পেতে হলে ক্লাইন্ট কে এমন কিছু জিনিস দেখাতে হবে যেটা দেখলে ক্লাইন্ট ইম্প্রেস হবে এবং বুঝতে পারবে আপনি কাজটি করতে পারবেন, ফলে কাজটি আপনাকে দিতে চাইবে।
যেমন ধরুন আপনি ওয়েব ডিজাইন এর কাজ করবেন। তাই আগে থাকতেই খুব সুন্দর একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট বানান। যিনি যেই সেক্টরে কাজ করবেন, এই রিলেটেড কিছু কাজ আপনি আগে থাকতেই করুন এবং সেই একই কাজ বিভিন্ন ক্লাইন্টের কাজে বিড করার সময় নমুনা হিসেবে যোগ করে দিন। এতে করে ক্লাইন্ট আপনার কভার লেটার পরার পাশাপাশি আপনার আগে থাকতে করা কিছু কাজের নমুনা দেখতে পাবে এবং সেটা পছন্দ হলে কাজটি আপনি পেয়েও যেতে পারেন। সোজা কথা ক্লাইন্ট কে বুঝিয়ে দিতে হবে আপনি কাজটি করতে পারবেন। তাহলেই যথেস্ট। এই ইন্সট্যান্ট পোর্টফোলিও টা বন্দুকের গুলির মত কাজ করে। আমি তো আপনাকে বলব, প্রয়োজনে আগে ১০ দিন ধরে কিছু মনমুগ্ধকর পোর্টফোলিও বানান, যেটা দেখলে ক্লাইন্ট আপনাকে কাজ দিতে বাধ্য।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্যঃ বিড করার সময় সবসময় নিজেকে বায়ারের জায়গায় নিয়ে ভাবুন, একটি ভেবে দেখুন বায়ারের জায়গায় আপনি হলে কি করতেন, কাকে কাজ দিতেন? আরও একবার ভাবুন, আপনার মধ্যে ঠিক কি যোগ্যতা আছে যেটার জন্য বায়ার আপনারা হায়ার করবে???
৫. সর্বশেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণঃ পোর্টফোলিও তো অনেক বানাইলেন, কিন্তু ক্লাইন্টের কাজে বিড করার পর ক্লাইন্ট যদি আপনার পোর্টফোলিও নাই দেখে তাহলে আর কি লাভ হল বলেন??? হুম, এর জন্য প্রয়োজন শক্তপোক্ত কভার লেটার। দুই লাইনে চরম একটি কভার লেটার লিখতে হবে যাতে ক্লাইন্ট এর চোখ আপনার উপর পরে। আর এই ক্ষেত্রে আপনার প্রোফাইল পিকচারটারও গুরুত্ব আছে। ভাবছেন আমি পাগল হয়ে গেলাম? ভাবছেন, ক্লাইন্ট কি আমার চেহারা দেখে কাজ দিবে নাকি? নাহ, এমনটা মোটেও নয়, তবে সত্যতা পরীক্ষার জন্য আমি নিজেই ফ্রীল্যান্সার.কম এ কিছু কাজ পোস্ট করি। সেখানে আমি দেখেছি বিডারদের লিস্ট গুলো কিভাবে সাজানো থাকে। এবং প্রায় ৫০ টি বিডের লিস্ট এ আপনার করা বিডটি ক্লাইন্ট এর চোখে নাও পরতে পরে। তবে এক্ষেত্রে একটি ভাল মানের প্রোফাইল পিকচার বেশ ভাল গুরুত্ব বহন করতে পারে। এখন সবাই চালাক হয়ে গেছে, কেউই আর আগের মত লম্বা কভার লেটার লিখে না, সবাই ই দুই লাইনে লিখে, তবে একটি সুন্দর প্রোফাইল পিকচার ক্লাইন্ট এর দৃষ্টি আপনার দিকে আনতে পারে। আর একবার আপনার দিকে তাকালে ক্লাইন্ট আপনার কভার লেটার পরবে এবং আপনি যদি কোন পোর্টফোলিও অ্যাটাচ করে থাকেন সেটা দেখবে। তবে ভাই, প্রোফাইল পিকচার এর ব্যাপারটা কিন্তু সম্পূর্ণই আমার নিজের মতামত। তবে, এটা নিশ্তিত থাকেন যে, ক্লাইন্ট কোন দিনই আমার/আপনার চেহারা দেখে কাজ দিবেন না, তবে গুড লুকিং প্রোফাইল হওয়ার জন্য ক্লাইন্ট আপনার কভার লেটারটা আগে পরবেন এবং আপনার পোর্টফোলিও গুলো চেক করবেন। কাজেই আমি মনে করি ছোট্ট একটা হাসির সাথে একটা স্মার্ট ছবি প্রোফাইলে যুক্ত করা যেতেই পারে।
আমাদের ফেসবুকে গ্রুপে আপনাকে স্বাগতম। এখানে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ।
অনলাইনে দ্রুত কাজ শেখার জন্য কাজ শেখার বিকল্প নেই। কাজ শিখতে এখানে ক্লিক করুন।
এতক্ষন যে বক বক গুলো করলাম সেগুলো কিন্তু প্রোফাইল এবং পোর্টফোলিও রিলেটেড ব্যাপার। আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চেয়েছেন কি রকম কভার লেটার লিখব। দুই একটা উদাহরণও চেয়েছেন অনেকেই। সেটা নিয়ে আজকে আর কথা বলতে পারলাম না, তবে আগামী টিউনে ইনশাআল্লাহ্ সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আজ এই পর্যন্তই। আগামী টিউনের আমন্ত্রণ রইল। ভাল থাকবেন সবাই। আল্লাহ্ হাফিজ।
14 Responses
ভালো পোষ্ট। আমার কাজে লাগবে।
vaia.apnar tutorial dekhe odesk er skril test ea pass korte parbo to
parben Insha-ALLAH
এসইও বাংলা ভিডিও টিউটোরিয়ালে আব্দুুল কাদের ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।
ভাই আপনার টিউটুরিয়াল দেখে অনেক কিছু শিখেছি । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । আমি সৌদিআরব থাকি । আমি HTML Photoshop typing
PTC এই গুলো পারি । আমি দেশে আসতেছি । ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যে কোন একটি বিষয়ের উপর কোর্স করতে চাই যাতে আমার চাকরির পাশাপাশি
আমি এটি করতে পারি । আপনার কাছে জানতে চাই কোনটির উপর কোর্স করলে আমি সহজে শিখতে ও করতে পারব । আমার বাড়ি কুমিল্লা । কুমিল্লাতে কি ভাল কোন প্রতিষ্ঠান আছে আপনার জানা মতে বা আপনার ? আমার মত অসংখ্য মানুষের উপকার করার জন্য আমরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ । আবার ও ধন্যবাদ ।
🙂 আমাকে ইমেইল করেন..
আমি https://www.itbari.com এর SEO শিখার জন্য DVD কিনেছি। I learn seo in a short time and create a profile in odesk. I am now waiting for my first job. I suggested seo learning dvd is very nice for training. thanks a lot mohammad abdul kader vai.
আসসালামু ওয়ালাইকুম আব্দুল কাদের ভাই। আমি আপনার একজন ছাত্র বলছি । আমি আপনার এস ইস ও টিউটোরিয়াল কিনেছি আর সমস্ত কাজ চর্চা করে ওডেস্ক ১০০% করে ২২ টি বিড করে ২ টি রেস্পন্স ও পেয়েছি। এ সমস্ত অবদান আপনার। কিন্তু আমি এখনো সফল নই। কারন আমি ক্লাইন্টের সাথে skype তে conversation করতে পারছিনা । তবে আমি হালও ছাড়ছিনা। একজন ক্লাইন্ট আমাকে বলেছে-
Sir,
I need to get a milestone program where you commit to do a…b….c and for that you get $$.
Can you prepare such a program for me?
Regards,
তাই বলছি আব্দুল কাদের ভাই উত্তর না দিয়ে আমাকে নিরাশ করবেন না । ওনেক আশা নিয়ে কাজটি শুরু করেছি। আপনি ছাড়া আমার কোনো SEO শিক্ষক নেই ।
আপনার এই লিখা টি পড়ে কিছুই ক্লিয়ারলি বোঝা যাচ্ছে না। আপনি আমাকে ফেসবুকে মেসেজ করুন। ধন্যবাদ।
কাদের ভাই।আমি ইংরেজী তেমন একটা বলতে পারিনা।কিন্তু হালকা পাতলা বুঝতে পারি।আমি কি ফ্রীল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে কাজ পাব? আর আমি ওডেস্কে এ স্ক্রিল টেস্টে ফেল করছি।আমায় আবার ১মাস পরে ট্রায় করতে বলছে।আমি কি এক মাস পূর্ণ হও্যার আগে উক্ত স্ক্রিল টেস্ট টা দিতে পারবনা?
ভাই আপনার টিউটুরিয়াল দেখে অনেক কিছু শিখেছি । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।আমি কি ফ্রীল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে কাজ পাব
It is very needful and helpful.
vai.amar kache apnar seo tutorial khubi valo legeche…kintoo ekta prb hocche je ami filezila diye upload hocche na…error dekhacche……….
আপনি আমাদের ই মেইল করুন